Breaking


Tuesday, October 18, 2022

বাংলা ব্যাকরণ।। সর্বনাম ও শ্রেণীবিভাগ ।।


:: বাংলা ব্যাকরণ।। সর্বনামের শ্রেণীবিভাগ ::

 বাংলা ব্যাকরণ।। সর্বনাম ও শ্রেণীবিভাগ ।।



সর্বনাম:- 
বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বাক্যে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন— আমি, তুমি, সে, তারা ইত্যাদি।
সর্বনাম পদ নানা প্রকারের হয়। এখানে বিভিন্নপ্রকার সর্বনামের পরিচয় দেওয়া হল।


                  সর্বনামের শ্রেণীবিভাগ 


  ১. ব্যক্তিবাচক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদে ব্যক্তি বা পুরুষকে বোঝায়, তাকে ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—আমি, আমরা, আমাকে, তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদের, সে, তারা, তুই, তোকে ইত্যাদি।
২. নির্দেশক বা নির্ণয়সূচক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদ কোনো ব্যক্তিকে, বস্তুকে বা ভাবকে নির্দিষ্টভাবে নির্দেশ করে, তাকে নির্দেশক বা নির্ণয়সূচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—এ, এই, ইনি,এঁকে, একে, এরা, এটা, ওই, ওটা ইত্যাদি।
 ৩. অনির্দেশক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদ কোনো অনির্দিষ্ট ব্যক্তি, বস্তু বা ভাবের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাকে অনির্দেশক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—কিছু, কেউ, যে কেউ, কেহ, অমুক, কোনোকিছু, আর কেউ ইত্যাদি ।
 8. প্রশ্নবাচক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদে কোনো কিছু জানার ইচ্ছা প্রকাশ পায়, তাকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—কী,কে, কোনটা, কারা, কীসে ইত্যাদি।
  ৫. সমষ্টিবাচক বা সাকল্যবাচক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদ সমষ্টিবাচক ব্যক্তি, বস্তু বা ভাবের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাকে সমষ্টিবাচক বা সাকল্যবাচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—সকল, সর্ব, সব, সবাই, সবে, সকলের, সবকিছু ইত্যাদি।
  ৬. আত্মবাচক সর্বনাম:-
যে সর্বনাম পদে অন্যের সাহায্য না নেওয়ার ভাবটি বেশ জোরের সঙ্গে প্রকাশ পায়, তাকে আত্মবাচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—নিজে, নিজ, আপনি, নিজের, নিজেদের, আপন ইত্যাদি।
  ৭. পারস্পরিক বা ব্যতিহারিক সর্বনাম:-
অন্যের সাহায্য ছাড়া স্বেচ্ছায় বা পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝাতে যে সর্বনাম পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে পারস্পরিক বা ব্যতিহারিক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—নিজে নিজে, আপনা-আপনি ইত্যাদি।
  ৮. সাপেক্ষবাচক বা সংযোগবাচক সর্বনাম:-
বাক্যের এক অংশের সঙ্গে অপর অংশের পারস্পরিক সংযোগ রক্ষার জন্য জোড়ায় জোড়ায় যে সর্বনাম পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সাপেক্ষবাচক বা সংযোগবাচক সর্বনাম পদ বলে। যেমন—তুমি যেমন করে বললে তেমন করে কেউ বলতে পারবে না। 'যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই। না'। যত গর্জায় তত বর্ষায় না। যে যায়, সে তো আর ফিরে না।


আলাদা-আলাদা বাক্যে প্রয়োগ করে সর্বনামের উদাহরণ ::
1.আত্মবাচক সর্বনাম
উত্তর: মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এই ব্যাপারটি দেখছেন।
2. সাপেক্ষ সর্বনাম
উত্তর: যে যায় লঙ্কায়, সে হয় রাবণ।
3.পারস্পরিক সর্বনাম
উত্তর: ঝামেলাটা আপনা-আপনি মিটে গেল।
4.সমষ্টিবাচক সর্বনাম
উত্তর: সর্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করো।
5.অনির্দেশক সর্বনাম
উত্তর: অনেককাল হল, এ-বাড়িতে কেউ থাকে না।
6.প্রশ্নবাচক সর্বনাম
উত্তর: কোথায় বেড়াতে চললে ?
7.নির্দেশক সর্বনাম
উত্তর: এই বইটা এখানে রাখল কে?
8.ব্যক্তিবাচক সর্বনাম
উত্তর: আমার কত কাজ পড়ে রয়েছে।
9.সংযোগবাচক সর্বনাম
উত্তর: আমি বলছি যে, প্রশ্নটা সিলেবাস-বহির্ভূত।

10.ব্যতিহারিক সর্বনাম / পারস্পরিক সর্বনাম

উত্তর: তোমরা আগে পরস্পরকে জান।


নীচের বাক্যগুলির স্থূলাক্ষর পদের কোনটি কী সর্বনাম নির্ণয় করো। 
1. যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে।
2. সবাই যখন বুদ্ধি জোগায় আমরা করি ভুল।
3. আপনারে বড়ো বলে বড়ো সেই নয়।
4. এর বেশি কেউ একটা আধলা দেবে না।
5. ওটা রেখে দাও, কাজে লাগবে।
6. আমি স্বয়ং সেখানে গেলাম।
7. কোথায় বেড়াতে চললে ?
8.  কথা বলতে নেই।
9. সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।

10. আমার নাম চুপকথা।


উত্তর::
1. যারে..... সে = সাপেক্ষ সর্বনাম।
2. সবাই = সমষ্টিবাচক সর্বনাম।
3. আপনারে = আত্মবাচক সর্বনাশ ।
4. কেউ = অনির্দেশক সর্বনাম।
5. ওটা = নির্দেশক সর্বনাম।
6. স্বয়ং = আত্মবাচক সর্বনাম।
7. কোথায় = প্রশ্নবাচক সর্বনাম।
8. ও = নির্দেশক সর্বনাম।
9. কেউ কেউ = অনির্দেশক সর্বনাম।
10. আমার = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।



আজকে তোমাদের সাথে ভাগ করে নিলাম বাংলা ব্যাকরণের গুরত্বপূর্ণ বিষয় বাংলা ব্যাকরণ।। সর্বনাম ও শ্রেণীবিভাগ ।। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো।

No comments:

Post a Comment